Thursday, September 22, 2016

কালো হয়ে জন্ম নেয়াটা যেন পাপের

Share it Please

যেখানে প্রতি মিনিটে মিনিটে সেলফি তুলে ফর্সা ছেলেমেয়েরা ফেইসবুকে আপলোড করছে, সেখানে নিজের সবথেকে ভালোলাগা ছবিতে ফটোশপে ব্রাইটনেস বাড়িয়েও প্রোফাইল পিকচার করতে হাজারো দ্বিধায় ইচ্ছা অপূরণীয়ই থেকে যাচ্ছে।

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় আয়োজিত ফ্যাশান শো'তে, টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের জন্য, নাটক সিনেমার জন্য কাছের কত কাছের বন্ধুবান্ধব নির্বাচিত হল, শুধু কালো হয়ে জন্মানোর জন্য এগুলোর ধারের কাছেও যেতে পারছে না। 

রাস্তায় বন্ধুর সাথে হেঁটে যাওয়ার সময় কোচিং ছুটি হওয়ার পর যত মেয়ে যাচ্ছে সবাই সেই ফর্সা বন্ধুটির দিকেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, এমনকি পাশকেটে যাওয়ার পরেও পেছন ফিরে বার বার তাকায় এবং আরেক বান্ধবীকে চিমটি কেটে বলে "ইশ ছেলেটা কত্ত কিউট"। 

ঠিক তখন বুকের মাঝখানে কেমন যেন একটা চাপ অনুভূত হয়। শুধুমাত্র কালো হয়ে জন্মানোর জন্য। 

ক্লাসের সবথেকে হ্যান্ডসাম ছেলেটাও এসে বন্ধুত্বের অফার দিচ্ছে, এমনকি ক্লাসের সবথেকে ভদ্র, মেধাবী ছাত্রটা পর্যন্ত তাকে আলাদা চোখে দেখে সবসময়। কত ছেলে তাকে ভালোবাসার, বন্ধুত্বের অফার দিচ্ছে। অথচ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হয়ে গেল কোন ছেলেই তাকে প্রপোজ করল না? শুধুমাত্র কালো হয়ে জন্মানোর জন্য। 

শহরের সবথেকে ধনী ছেলের সাথে বিয়ে, মডেলিং এ চান্স, চারিদিকে নামডাক শুধুমাত্র ফর্সা মেয়েটিরই। অথচ কালো মেয়ের বিয়ের সময় কত ভালোভালো সম্বন্ধ এসে ফিরে যাচ্ছে, একটি ছেলেও তাকে পছন্দ করছে না। 

ঠিক তখন বুকের মাঝখানে কেমন যেন একটা চাপ অনুভূত হয়, এবং এই পৃথিবীতে নিজেকে সবথেকে হতভাগী মনে হয়, শুধুমাত্র কালো হয়ে জন্মানোর জন্য। 

যখন ক্লাসের ভেতর একই নামের দুজন ব্যাক্তি থাকে, ধরুন প্রথম জন ফর্সা, দ্বিতীয়জন কালো, তখন যদি সেই কালো ছেলে/ মেয়েটাকে কেউ খুঁজে, "ওমুক কে দেখেছিস?" 
প্রত্যুত্তরে তার বন্ধুরা বলে "কোন ওমুক "ক্যাইল্লা, কাল্লু টা নাকি?" ঠিক তখনি যদি ঐ ছেলে/ মেয়েটা তার পেছনেই দাঁড়িয়ে এই কথাটি শুনে ফেলে। তখনও বুকের মাঝখানে কেমন যেন একটা চাপ অনুভূত হয়। 

গায়ের রং কালো হওয়ার কারণে এমন অনেক ছেলেমেয়েকেই জীবনে একটিবার হলেও আফসোস করতে হয়। কেন সে এই পৃথিবীর বুকে কালো হয়ে জন্মালো?

No comments:

Post a Comment

About me

Blogroll

About